Home

অধ্যক্ষ ড. মোঃ শাহজাহান আলম সাজু, মাননীয় সংসদ সদস্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২

সংক্ষিপ্ত রাজনৈতিক কর্মকান্ড

অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মেঘনা বিধৌত আশুগঞ্জ উপজেলার বৈকণ্ঠপুর (বড়তল্লা) গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত্র পরিবারে ১৯৬৭ সালের ৩০ জুন জন্মগ্রহণ করেন। শাহজাহান আলম সাজু’র প্রপিতামহ মৌলভী জনাব আলী সরকার ছিলেন এলাকার একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী এবং আশুগঞ্জ বন্দরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। জনাব সাজু’র পিতা জনাব সামসুল হক একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়েতে কর্মরত ছিলেন।
শাহজাহান আলম সাজু আশুগঞ্জ (পশ্চিম) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজী আঃ জলিল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাঠ গ্রহণ শেষে ১৯৮৪ সালে ঢাকা গভঃ কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা-ইন-কমার্সে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। তিনি ১৯৮৯ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে হিসাববিজ্ঞানে (বিবিএস সম্মান) এবং ১৯৯০ সালে এমবিএস ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি ঢাকা মহানগর মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য, ঢাকা গভঃ কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের আহবায়ক ছিলেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহবায়ক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতীয় কার্যকরী সংসদে দুইবার সদস্য, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক ও সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। সৃষ্টিশীল গঠনমূলক ছাত্র রাজনীতিতে অনন্য অবদান রাখায় তিনি ‘পালক’ এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
বর্তমান আধুনিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার নির্মাণ করায় কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহি®কৃত হন। পরবর্তীতে দেশব্যাপী তীব্র ছাত্র আন্দোলনের ফলে কর্তৃপক্ষ তার ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন। ১৯৮৮ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক সম্মেলনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোঃ এরশাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের দাবি না মেনেই চলে যাবার সময় শাহজাহান আলম সাজু’র নেতৃত্বে ছাত্ররা রাস্তায় শুয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করলে রাষ্ট্রপতি তাৎক্ষণিকভাবে ছাত্রদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হন। উক্ত ঘটনা পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হলে শাহজাহান আলম সাজু ছাত্রনেতা হিসাবে প্রশংসার সাথে সারাদেশে আলোচিত হন।
স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তাকে চার-চারবার কারাবরণ করতে হয়েছে। ১৯৮৫ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ময়েজ উদ্দিন হত্যা মামলার রায়ের দিন ঢাকা জজকোর্ট চত্বরে ছাত্রলীগের মিছিলে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। বোমা হামলার সেই ক্ষত চিহ্ন এখনো তিনি বয়ে বেড়াচ্ছেন।
১৯৮৮ সালে গাজীপুরস্থ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা ইকবালকে বাস চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ সভাপতি শাহজাহান আলম সাজু’র নেতৃত্বে সড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে এরশাদ সরকারের প্রভাবশালী স্থানীয় এম.পি ছাত্রদের হাতে লাঞ্ছিত হন। উক্ত ঘটনায় এম.পি’র প্রত্যক্ষ মদদে পুলিশের সহযোগিতায় কয়েকশত সশস্ত্র বহিরাগত সন্ত্রাসী শাহজাহান আলম সাজুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে হামলা চালায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীরা উক্ত হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললে ৫/৬ ঘন্টাব্যাপী উভয় পক্ষে তুমুল সংঘর্ষ চলে। জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালীন সময়ে উক্ত ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করে তৎকালীন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা জননেত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং তাঁর হস্তক্ষেপে ঢাকা থেকে কয়েকশত দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শাহজাহান আলম সাজু সহ ছাত্রদের উদ্ধার করে।
১৯৯০ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুর থেকে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলে শাহজাহান আলম সাজু’র নেতৃত্বে সর্বদলীয় প্রতিরোধ আন্দোলন চলাকালীন সময়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এরশাদ তাকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াতে পরামর্শ দেন। কিন্তু শাহজাহান আলম সাজু আন্দোলন অব্যাহত রাখলে ৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ-বিডিআর যৌথভাবে ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে শাহজাহান আলম সাজু সহ ১২ ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন চালায় যার ক্ষত চিহ্ন এখনও তিনি বয়ে বেড়াচ্ছেন। (“বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও ৮ দলীয় জোট নেত্রী শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহজাহান আলম সাজু সহ ১২ জন ছাত্রনেতাকে পুলিশ ও বিডিআর কর্তৃক গ্রেফতার ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করেন। দৈনিক ইত্তেফাক/বাংলার বাণী/দৈনিক বাংলা/দৈনিক খবর ০৮/০২/১৯৯০খ্রিঃ)।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি থাকাকালীন প্রতিপক্ষ ছাত্র সংগঠনের সন্ত্রাসীরা তাকে দুইবার অপহরণ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। জাতীয় সংসদের তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা জননেত্রী শেখ হাসিনার তড়িৎ হস্তক্ষেপে অলৌকিকভাবে তিনি প্রাণে রক্ষা পান।
গতানুগতিক ছাত্র রাজনীতির বাইরে সৃজনশীল কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতিতে নতুন ধারা সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং ও ভর্তি গাইড “চ্যালেঞ্জ” সৃজনশীল কর্মকান্ডেরই একটি অংশ। পরবর্তীতে এ কোচিং সেন্টারের আয় থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্নিকটে শেখ পাড়ায় জমি ক্রয় করে ‘বঙ্গবন্ধু পল্লী” স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
মেধাবী ছাত্রনেতা শাহজাহান আলম সাজু বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় বড় চাকুরির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে এলাকার যুবক সম্প্রদায়কে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আশুগঞ্জে তিনি “বঙ্গবন্ধু কারিগরি ও বাণিজ্যিক মহাবিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠা করেন। উক্ত মহাবিদ্যালয়ের তিনি প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। মেধাবী ছাত্রনেতা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত হয়ে অত্যন্ত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ২০০১ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শত প্রতিকূলতার মধ্যে তাঁর প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু কারিগরি কলেজ পর পর তিনবার বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে শ্রেষ্ঠ কলেজের স্বীকৃতি লাভ করে। অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু ২০০৪ সালে আশুগঞ্জ উপজেলার শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও তিনি আশুগঞ্জে প্রতিষ্ঠা করেন “জাহানারা কুদ্দুছ ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, আশুগঞ্জ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এবং হাজী আঃ কুদ্দুছ স্কুল এন্ড কলেজের তিনি দাতা সদস্য এবং স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। কর্মমুখী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে তিনি ময়মনসিংহে প্রতিষ্ঠা করেন ভালুকা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, টাঙ্গাইলে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন এলেঙ্গা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও এলেঙ্গা মেডিকেল টেকনোলজি। এছাড়াও তিনি এলাকার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট, মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ ও উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। ১৯৯৮ এবং ২০০৪ সালে বন্যা দুর্গতদের মাঝে তিনি বিপুল পরিমাণে ত্রাণ বিতরণ করে এবং বন্যাদুর্গতদের সাথে থেকে তাদের সহায়তা করেন যা এলাকাবাসী চিরদিন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ রাখবে।
এক সময়কার তুখোড় ছাত্রনেতা বর্তমানে শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু দেশের শিক্ষার মানন্নোয়নে এবং শিক্ষকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে গুরুত্ব¡পূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তিনি স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, (বাংলাদেশ বেসরকারি কারিগরি শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি), ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব টিচার্স ইউনিয়নের প্রথম সেক্রেটারি, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ছাড়াও শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্ব¡পূর্ণ কমিটিতে কাজ করছেন এবং শিক্ষার উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছেন। এছাড়াও তিনি- বাংলা একাডেমী, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি, জাতীয় বুদ্ধি প্রতিবন্ধি ফাউন্ডেশন এর আজীবন সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন।
২০০৭ সালে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের মিছিলে পুলিশী হামলায় অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু গুরুতর আহত হন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এদেশের শিক্ষক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হন এবং সরকার শিক্ষক কর্মচারীদের ১০০% বেতন ভাতা প্রদান করতে বাধ্য হয়। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু একজন লেখক, সাংবাদিক ও কলামিষ্ট হিসেবেও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব ও আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তাঁর লেখা “মুক্তিযুদ্ধ এবং আশুগঞ্জ” গ্রন্থটি মুক্তিযুদ্ধের একটি ঐতিহাসিক দলিল। এছাড়াও তাঁর এবং মোঃ আশরাফুল আলমের যৌথভাবে লেখা ‘ইসলাম ও বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থটি পাঠক সমাজে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু’র লেখা “শেখ হাসিনা যখন কারাগারে”, “ইসলামের দৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার”, ‘আশুগঞ্জে ইসলাম’, ‘স্মৃতিতে জিল্লুর রহমান’, ‘শেকড়ের সন্ধানে’ অন্যতম। এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি বই প্রকাশের কাজ চলছে।
রাজনৈতিক কারণে অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু’কে অনেক ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে। শত বাধা বিঘœ পার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জন করলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হওয়ায় ১৯৯৩ খ্রিঃ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম কনভোকশনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বেগম খালেদা জিয়ার নিকট থেকে তিনি সার্টিফিকেট গ্রহন প্রত্যাখান করে ত্যাগের অনন্য দৃষ্টি স্থাপন করেন। জাতীয় পত্র পত্রিকায় সংবাদটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। (- খবর বাংলার বাণী / ইত্তেফাক খবর-২৪.০৮.১৯৯৩ খ্রিঃ)
এক এগারো ঘটনায় রাজনৈতিক বিপর্যয়ের পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের পর হাতে গোনা যে কয়জন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসিনার মুক্তির দাবীতে রাজপথে সাহসী ভূমিকা পালন করেন অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু তাদের মধ্যে অন্যতম। শেখ হাসিনার মুক্তির দাবীতে শিক্ষক নেতা হিসেবে অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু সর্বপ্রথম বিবৃতি প্রদান করেছিলেন। রাজনৈতিক সেই চরম দুঃসময়ে আওয়ামী লীগ তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিল্লুর রহমানের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার সাবজেলের সামনে নেতা কর্মীদের সংঘটিত করেছেন অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু তাদের অন্যতম ( এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু’র লেখা “শেখ হাসিনা যখন কারাগারে” এবং “স্মৃতিতে জিল্লুর রহমান” গ্রন্থে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে)।
বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের শাসনামলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু অবর্ণনীয় রাষ্ট্রীয় নির্যাতনে শিকার হন। সরকারিভাবে আশুগঞ্জ উপজেলার শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ হওয়ার পরও তাকে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানী ও নির্যাতন করা হয়। দফায় দফায় বিভিন্ন তদন্ত, মিথ্যা মামলা দিয়েও কোন অভিযোগ প্রমান করতে না পেরেও বেআইনীভাবে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তার বেতন স্টপ পেমেন্ট করা হয়। পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে সরকার তার বেতন ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়। রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে আশুগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত এলজিএল ফ্লাকশনেশন প্লান্ট শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে সিলেটে স্থানান্তরের প্রতিবাদে অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু’র নেতৃত্বে আশুগঞ্জবাসী তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলে। উক্ত ঘটনায় বিএনপি-জামাত জোট সরকার অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু সহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলাসহ দ্রুত বিচার আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করে দফায় দফায় সরকারী বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে নির্যাতন চালানো হয়।
আশুগঞ্জে উপজেলা বাস্তবায়ন ও নৌবন্দর প্রতিষ্ঠায় অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু’ই মূল ভুমিকা পালন করেন। ১৯৯৩ খ্রিঃ সালে আশুগঞ্জ ফেরীঘাটে আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে ছাত্রনেতা শাহজাহান সাজু’র প্রস্তাব অনুয়ায়ী জাতীয় সংসদের তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে আশুগঞ্জ উপজেলা বাস্তবায়ন, নৌবন্দর স্থাপন ও আশুগঞ্জ-ভৈরব নির্মাণের ঘোষনা দেন। সেই ঘোষনার সুত্র ধরেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ২০০০খ্রিঃ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা আশুগঞ্জ উপজেলা প্রতিষ্ঠা এবং পরবর্তীতে আশুগঞ্জে আন্তজার্তিক নৌবন্দর ও ট্রানজিট পয়েন্ট স্থাপিত হয়।
অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু শিক্ষা বিস্তার, মুক্তিযুদ্ধ গবেষনা, সমাজসেবার লক্ষ্যে ২০০১ খ্রিঃ সালে প্রতিষ্ঠা করে “প্রিন্সিপাল শাহজাহান ফাউ-েশন”। এই ফাউ-েশনের পক্ষ থেকে আশুগঞ্জে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘জাহানারা কুদ্দুস ইঞ্জিনিয়ারিং ইনষ্টিটিউট’ ও আশুগঞ্জ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল’। প্রিন্সিপাল শাহজাহান ফাউ-েশনের উদ্যোগে ২০০৪ খ্রিঃ সালের বন্যায় ১০ হাজার কেজি চাউলসহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরন করা হয়। উক্ত ফাউ-েশনের গবেষনা শাখা থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধ এবং আশুগঞ্জ’, ‘ইসলাম ও বঙ্গবন্ধু’, ‘শেখ হাসিনা যখন কারাগারে’, ‘শেকড়ের সন্ধানে’, সহ অন্তত ১০টি গবেষনা গ্রন্থ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য পরিমান অনুদান প্রদান করা হয়। এছাড়াও এই ফাউ-েশনের মাধ্যমে গত ১২ বছরে অন্তত ২০ লক্ষ টাকা মেধা বৃত্তি প্রদান করা হয়।
অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু সুস্থধারার ছাত্র রাজনীতি, শিক্ষা বিস্তার, সমাজ সেবা, মুক্তিযুদ্ধ গবেষনা প্রভৃতি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় জাতীয় ও আন্তজার্তিক প্রায় অর্ধশত পদক লাভ করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো লিংকন ইউনিভার্সিটি এ্যাওয়ার্ড (মালেশিয়া), ইন্টারন্যাশনাল ফেন্ডশিপ এ্যাওয়ার্ড-২০১৭ (নেপাল), খোলামন এ্যওয়ার্ড-২০১৭ ( কলকাতা, ভারত), সৃজন বার্তা এ্যওয়ার্ড-২০১৬(কলকাতা, ভারত), ডঋঞট ইন্টারন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড, শিপাপ এ্যাওয়ার্ড, কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ পদক, শেরে বাংলা স্বর্ন পদক, জীবনান্দ দাস সম্মাননা, মাদার তেরেসা এ্যাওয়ার্ড, ড. মুহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বর্ন পদক উল্লেখ্যযোগ্য।
এমনিভাবে অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু ছাত্র জীবন থেকেই তিলে তিলে নিজেকে একজন আদর্শ রাজনৈতিক কর্মী ও নেতা হিসেবে গড়ে তোলেন। ২০০৯খ্রিঃ সালে সরকার রাজপথের পরীক্ষিত, ত্যাগী নেতা অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু’কে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মর্যাদাপূর্ণ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব পদে নিয়োগ দিয়েছিল। তাঁর সততা, বিচক্ষণতা, নিষ্ঠা ও কর্মদক্ষতার জন্য সরকার তাকে পরপর তিনবার উক্ত পদে তাকে পরবর্তী নিয়োগ প্রদান করে। কল্যাণ ট্রাস্টের ইতিহাসে পরপর তিনবার সদস্য সচিব নিয়োগপ্রাপ্তির ঘটনা এটাই পথম। তিনি বর্তমানে এদেশের অবহেলিত শিক্ষক সমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু শুধু দেশেই নয় দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও খ্যাতি অর্জন করেছেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার লিংকন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির আসন অলংকৃত করে তিনি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। একজন শিক্ষক নেতা হিসেবে তিনি শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দুবাই, কুয়েত, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও নেপালসহ বিভিন্ন দেশে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম এ অংশগ্রহণ করেন।

https://www.facebook.com/shahjahn.saju

1 no sonargaon road, polashi-nilkhet, dhaka-1205